অভিযাত্রী
এবিএম মূসা

সাংবাদিক এবিএম মূসা ১৯৩১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ফেনীর পরশুরাম থানার ধর্মপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।তার শিক্ষাজীবন কেটেছে চট্টগ্রামের সরকারি মোসলেম হাইস্কুল, নোয়াখালী জিলা স্কুল, ফেনী কলেজ, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। বিএ প্রাইভেট পরীক্ষা দিয়েছেন চৌমুহনী কলেজ থেকে। কলেজে পড়াকালে সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি চৌমুহনী থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক ‘কৈফিয়ত’ পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে। এ সময়ই জড়িয়ে পড়েন বাম রাজনীতিতে। নিয়মিত লিখতেন সাপ্তাহিক সংগ্রাম ও পাকিস্তান অবজারভারে।
এ বি এম মূসা দীর্ঘ ৬৩ বছর ধরে সাংবাদিকতার বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন। ১৯৫০ সালে দৈনিক ইনসাফ থেকে তার সাংবাদিকতা জীবন শুরু। ওই বছর তিনি ইংরেজি দৈনিক পাকিস্তান অবজারভারে যোগ দেন। ১৯৭১ সাল পর্যন্ত তিনি পাকিস্তান অবজারভারে রিপোর্টার, স্পোর্টস রিপোর্টার, বার্তা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সময় তৎকালীন পাকিস্তান সরকার অবজারভার বন্ধ করে দিলে তিনি সংবাদে যোগ দেন। ১৯৫৪ সালে তিনি অবজারভারে ফিরে যান। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বিবিসি, সানডে টাইমস প্রভৃতি পত্রিকার সংবাদদাতা হিসেবে তিনি রণাঙ্গন থেকে সংবাদ প্রেরণ করতেন। স্বাধীনতার পর তিনি বিটিভির মহাব্যবস্থাপক, মর্নিং নিউজের সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৮ সালে এ বি এম মূসা ব্যাংককে অবস্থিত জাতিসংঘের পরিবেশ কার্যক্রমের (এসকাপ) এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক পদে যোগ দেন। দেশে ফিরে তিনি ১৯৮১ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক এবং ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার মহাব্যবস্থাপক ও প্রধান সম্পাদক ছিলেন।
পারিবারিক জীবনে এবিএম মূসা তিন মেয়ে ও এক ছেলের জনক। স্ত্রী সেতারা মূসা এদেশের নারী সাংবাদিকতার অন্যতম পথিকৃৎ। এবিএম মূসার পছন্দের সাংবাদিক অতীতে হ্যারি ইভান্স, বর্তমানে গার্ডিয়ানের রবার্ট ফিস্ক। সাংবাদিকতায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় এবিএম মূসা বিভিন্ন পুরস্কার অর্জন করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে একুশে পদক (১৯৯৯), জেফারসন ফেলোশিপ (১৯৭০), কমনওয়েলথ প্রেস ইউনিয়ন ফেলোশিপ (১৯৬১)।